গাংনী প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের আজান গ্রামে আপন বোন ও প্রভাব শালী দুলাভাইয়ের চক্রান্তে দিশেহারা হযরত আলী নামের এক ভাই। হযরত আলীকে এলাকা ছাড়া করতে একের পর এক হামলা ও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করছেন বোন-দুলাভাই। প্রভাবশালী দুলা ভাইয়ের অত্যাচার একদিকে পুলিশ আর অন্যদিকে মাস্তান সবমিলিয়ে নিজের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেরাচ্ছে হযরত আলী।
আজান গ্রামের মৃত জাহান আলীর ছেলে হযরত আলী দাবি করেন, আমার বড় বোন জাহান্নারা খাতুনসহ ৫ বোন ও আমিসহ দুই ভাইয়ের জমি আমার বাবা সবাইকে সমান করে ভাগ করে দেয়। পরবর্তিতে বাবার কিছু জমি আমাকে অতিরিক্ত দিয়েছে যেটা সকল ভাইবোনের সম্মতিতে। যে জমিটি সরকারী খাস-খতিয়ান ভুক্ত কিছু অংশ। আমার বড় বোন জাহান্নারা ছাড়া সকলেই এই জমির বিষয়টি মেনে নিয়েছে। যেহেতু জমিটির বৈধকোন কাগজপত্র নেই, তাছাড়া অন্যভাই-বোনের তুলনায় আর্থিকভাবে আমি দূর্বল সেই বিষয়টি চিন্তা করেই আমাকে জমিটি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বড় বোনের হিংসার কারণ হয় ওই জমিটি। আর এই হিংসা থেকেই একের পর এক ষড়যন্ত্র শুরু করে বোন। সাথে যোগ দেয় দুলা ভাই প্রভাব শালী হায়দার আলী। হায়দার আলীর নিদের্শে কয়েক বার হামলা চালিয়ে হাসপাতালে পাঠায় হযরত আলীকে।
তিনি আরো দাবি করেন, দুলা ভাই হায়দার আলী গাংনী থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা নির্যাতনের অভিযোগ দেয়। অভিযোগ দেয় ঘরবাড়ি ভেঙে টাকা পয়সা ও মালামাল লুটপাটের। যা বার বার মিথ্যা প্রমাণ হয় কিন্তু হয়রানির শেষ কোথায়। ঘটনা তদন্তের আগেই বার বার জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়। জামিনে বের হয়ে পুলিশের তদন্তে আমি নির্দোশ প্রমাণ হয়। স্থাণীয় সালিস সভায় আমার পক্ষে বার বার রায় হওয়ার পরেও একের পর এক অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। গত কয়েকদিন আগে আদালতে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের। কিন্তু তিনি সেই বাড়িতে বসবাস করছে আবার সেই বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করছেন। কয়েক দফা হামলার শিকার হয়ে, বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় হাজতবাস করে অবশেষে আবারো মিথ্যা বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করায় তিনি আইনী সহায়তা পেতে আদালতের নিকট আশ্রয় চাইবে বলে জানিয়েছেন।
এদিকে তিনি আরো অভিযোগ করেন, এলাকার প্রভাব শালী আমার দুলা ভাই পরিচয় দেওয়া হায়দার আলী আমার বোনকে বিবাহের কথা জানালেও কিন্তু বিয়ের বৈধ কাগজপত্র আমাদের দেখায়নি। পারিবারিক ভাবেও বিয়ে হয়নি তাদের ফলে এটা নিয়ে এলাকায় নানা মুখি আলোচনা-সমালোচনা হয়। এবিষয় নিয়ে আমাদেরকে দোষ দেয় আমার বড় বোন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গত বৃহস্পতিবার ঘর বাড়ি ভেঙে দেওয়ার লুটপাটের অভিযোগ বিভিন্ন জায়গায়। কিন্তু বাস্তবে এমন ঘটনা গ্রামে ঘটেনি। এবিষয় নিয়ে গাংনী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়, কিন্তু পুলিশ এসে ভাংচুরের কোন আলামত পায়নি।
স্থানীয় লোকজন দাবি করেন, হায়দার আলী প্রভাব শালী হওয়ায় গ্রামের কেউ ওই মহিলার এ মিথ্যা অভিযোগের পরেও কোন কথা বলে না। এদিকে মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলা বা ভাংচুরের কোন আলামত না পাওয়ায় কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় গাংনী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ও বিভিন্ন সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য সরবারহ করেন বোন জাহান্নারা খাতুন। সেখানে জাহান্নারা দাবি করেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেও সেখান থেকে পুলিশ এসে পরিদর্শন করে গেছে। কিন্তু আশানুরুপ কোন কিছু করেনি।
স্থানীয় লোকজন আরো অভিযোগ করে, হায়দার গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জমি জোরপূর্বক দখল করে চলেছে। আওয়ামীলীগ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ গ্রামবাসীর জমি দখল করছে। বিষয়টি গ্রামে যেকোন সময়ে বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে।
এদিকে হযরতের বড় বোন জাহান্নারা অভিযোগ করে তাকে মারধর করে বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে তারিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে আজান গ্রামে গত মঙ্গলবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায় সেই বাড়ি যেমন ছিলো তেমনই রয়েছে। কোথায় কোন হামলা বা ভাংচুরের চিহ্ন নেই। বাড়ির সামনে গাছ, ঘরের জিনিসপত্র সব ঠিক আছে সাথে তিনিও ওই বাড়িতে বসবাস করছে।
এবিষয়ে হায়দার আলীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমান জানান, এরআগে ভারত থেকে উঠে আসা একজনকে জোরপূর্বক আজান গ্রামের হযরত আলীর জমিতে বসিয়ে দেয় স্থানীয় এক প্রভাব শালী। বিষয়টি নিয়ে হযরত আলী অভিযোগ করলে আমি কয়েক বার সালিশের মাধ্যমে সমাধান করে দিয়েছি এবং ওই ব্যাক্তি জমিটি ছেড়ে দেয়। আর কয়েকদিন আগে হযরতের বোন ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়ে অভিযোগ করে কিন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কোন প্রমান না পাওয়ায় মামলা নিতে পারেনি।